বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিলম্ব ফলের গুণাগুণ

বিলম্ব ফলে উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিলম্ব ফলের গুনাগুন সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। বিলম্ব বাংলাদেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত অপরিচিত একটি ফল। 



বিলম্ব ফলটির অনেক অজানা তথ্য জানতে ও বিলম্ব ফলে উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে বিস্তারিত তথ্য এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব। 

পেজ সূচিপত্র : বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিলম্ব ফলের গুনাগুন 

বিলম্ব ফলে উপকারিতা ও অপকারিতা 

বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশে প্রায় অনেক জায়গায় বিলম্ব ফলের গাছ দেখা যায়। বিলম্ব ফল আমড়ার মত টক হয়ে থাকে। বিলম্ব ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা রয়েছে। কিন্তু অপকারিতার চেয়ে উপকারিতার অনেক বেশি। সাধারণত বিলম্ব ফল মূলত চুলকানি নিরাময় করে।

এছাড়াও বিলম্ব ফল ছাড়াও বিলম্বর পাতা অনেক উপকারী। চামড়া ফাটার জন্য, কিংবা চামড়া ফুলে যাওয়া, বাত ইত্যাদি সমস্যায় বিলম্বের পাতার পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। যা অত্যন্ত উপকারী।  বিলম্ব গাছের ফল প্রতিনিয়ত খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস এবং বিভিন্ন ধরনের উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

এছাড়াও বিলম্ব ফুল গরম পানিতে ফুটিয়ে তার নিয়মিত সেবন করলে সর্দি-কাশি খুব সহজে ভালো হয়ে যায়। বিলম্বকে অনেকেই বিলম্বী নামেও চেনে। বিলম্ব উদ্ভিদটি এক্সিডেন্সি গোত্রের অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ। বিলম্ব ফল এর উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক এবং এর গুণগত মানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। 

বিলম্ব ফলের আচার বানানোর নিয়ম

বিলম্ব ফলের টক ঝাল মিষ্টি আচার করা হয়ে থাকে। বিলম্ব ফলের আচার বানানোর জন্য প্রথমত কয়েকটি উপকরণ এর প্রয়োজন হবে উপকরণগুলো হল ১ কেজি বিলম্ব সাথে দুটো রসুন, সরিষা বাটা, সরিষার তেল, আদা বাটা, বোম্বাই মরিচ কুচি,জিরা বাটা, লবণ,সিরকা, চিনি।এই কয়েকটি উপকরণ প্রয়োজন হবে। 

প্রথমত সরিষার তেল গরম করে এর ভিতর একে একে বোম্বাই মরিচ, রসুন বাটা,আদা বাটা, সরিষা বাটা, চিরা বাটা দিয়ে ভালোমতো কিছুক্ষণ নাড়তে থাকি। এরপর অর্ধেক কেটে এই তেল মশলার মধ্যে ঢেলে দিই ভালো মতন নেড়ে নিতে হবে।কিছুক্ষণ নাড়ার পরে বিলম্ব সিদ্ধ হয়ে যাবে বিলম্ব সিদ্ধ হওয়ার পরে চিনি এবং লবণ দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে এবং তারপর পাঁচফোড়ন গুড়ো করে আচারের মধ্যে ছিটিয়ে দিতে হবে।

পরবর্তীতে সেই আচারগুলো ভালোভাবে মিশাতে হবে । দুই থেকে তিন দিন রোদে শুকাতে হবে শুকানের শুকানোর ফলে আচারের স্বাদ আরো বেড়ে যাবে। এবং সংরক্ষণের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে প্রায়ই এক থেকে দুই বছর সংরক্ষণ করা যাবেও

বিলম্ব ফলের ঔষধি গুন 

বিলম্ব ফলের অনেক ঔষধি গুন রয়েছে নিচে তার আলোচনা করা হলো :

  • বিলম্ব গাছের ফল প্রতিনিয়ত খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • সর্দি কাশি নিরাময় বিলম্ব ফুলভালো কাজ দেয়। বিলম্ব ফুল পানিতে ফুটিয়ে তা নিয়মিত সেবন করলে সর্দি-কাশি ভালো হয়ে যায়। 
  • বিলম্বের পাতা বেটে গায়ে লাগালে চুলকানি সমস্যা দূর হয়। 
  • বিলম্বর পাতা বিষধর প্রাণীর কামড়ের জায়গায় লাগালে অনেকটা উপকারে আসে। 
  • ফিলিপাইনে বিলম্বর পাতা চুলকানি ফোলা বাদ মাম্পস বা চামড়া ফাটার জন্য পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

 বিলম্ব ফল কোথায় পাওয়া যায়

কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিলম্বর গাছ বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশ্বের প্রায় অনেক দেশেই পাওয়া যায় তবে অধিকাংশ বিলম্ব ফল বা বিলম্বের গাছ রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় শ্রীলঙ্কায় এবং মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের অনেক মানুষের কাছে এই বিলম্ব ফলটি অপরিচিত বলে মনে হতে পারে প্রায় মানুষিক বিলম্ব ফল কি তা সম্পর্কে জানেনা। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলায় বেশি দেখা যায় এই বিলম্ব গাছ।

বাংলাদেশে এই বিলম্ব ফলের অনেক প্রচলন না থাকায় সচরাচর এটি বাংলাদেশী নাগরিকদের কাছে অন্যান্য ফলের মত পরিচিত নাই। প্রতিনিয়ত বিরম্ভ গাছের যত্ন নিলে প্রতিবছরই গাছ থেকে ফল পাওয়া যাবে। সাধারণত বিলুপ্তপ্রায় সুস্বাদু ফলের মতো বিলম্ব হলো একটি অন্যতম সুস্বাদু ফলের মধ্যে পড়ে। বিলম্ব ও আমড়া প্রায় একই ধরনের ফল। আমড়া এবং বিলম্ব ফলের স্বাদ  কিছুটা একই।


বিলম্ব ফলের অপকারিতা

সবকিছুরই উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। তেমন বিলম্ব ফলের ক্ষেত্রেও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে বিলম্ব ফলের ক্ষেত্রে অপকারিতা তুলনায় উপকারিতাই অনেক বেশি। বিলম্ব ফলের  অপ বেশি যাবেনা এই ফলে উপস্থিত এক্সেলেট রয়েছে। যা কিডনি নষ্ট করে ফেলতে পারে বা কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। সব সময় চেষ্টা করতে হবে পরিণত মাত্রায় গ্রহণ করা। শুধু বিলম্ব ফল পরিণত মাত্রায় খেলে হবে না। সবকিছুই আমাদের পরিমিত মাত্রায় করা উচিত। যার ফলে  আমাদের শরীরে অস্বাভাবিক কিছু ঘটবে।

 তাই বিলম্ব ফল খাওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যে বিলম্ব ফল যেন বেশি মাত্রায় খাওয়া না হয়ে যায়। তবে বিলম্ব ফলের উপকারিতা ছাড়া একটা অপকারিতা লক্ষ্য করা যায় না। তবে নির্দিষ্ট পরিমাণে বিলম্ব ফল খেলে অপকারিতা কি আমাদের শরীরে কোন ক্ষতি করতে পারবে না এবং কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার মত সমস্যাও হবে না। 

বিলম্ব ফল কিভাবে খায়

বিলম্ব ফলটির অনেক উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের শরীরে অনেক ধরনের রোগ উপশম করতে সাহায্য করে এবং এই ফলটি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। বিলম্ব ফলটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় যেমন আচার করে, ছোট মাছে ও ডালে দিয়ে।বিলম্ব ফলটি খেতে অনেক টক এটি ডালে দিয়ে খেলে অনেক সুস্বাদু  লাগে। 

বিলম্ব ফলটি অনেকটা আমড়ার মত টক স্বাদ যুক্ত।যারা আমরা ফলটির সাথে পরিচিত আছেন কিংবা আমরা ফলটি দেখতে কেমন হয় কিংবা খেতে কেমন তা জানেন তারা অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে বিলম্ব ফল তার বিকল্পই একটি ফল। বিলম্ব ফলটি কাঁচা ও খাওয়া যায়। বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক এবং বিলম্ব ফলে গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না  

 

 বিলম্ব ফলের পুষ্টিগুণ 

বিলম্ব ফলে আমিষ, শ্বেতসার চর্বি, খনিজ ভিটামিন কারো টিম ক্যালোরি এই পোস্টটি গুণ ফলে বিদ্যমান। বিলম্ব ফলের চাটনি বানিয়ে খেতে অনেকেই খুব পছন্দ করেন। ১০০ গ্রাম বিলম্ব হয়ে রয়েছে আর্দ্রতা ৯৪.২-৯৪.৭ গ্রাম, ০.৬১ গ্রাম ফসফরাস ১১.১ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩.৪মিলিগ্রাম, লৌহ ১.০১ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০১০ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন ০.০২৬ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ০.০৩৫ মিলিগ্রাম। 

বিলম্ব ফলের গাছ 

বিলম্ব ফলটি পাহাড়ি লোকজনদের খুব পছন্দের একটি ফল। সাধারণত পাহাড় লোকজনরাই বিলম্ব ফলটিকে বেশি পছন্দ করে থাকেন। বিলম্ব ফলের গাছটিতে পুরোটাই জুড়ে এই ফল হয়ে থাকে। বিলম্ব ফল ও ফলের গাছের পাতা ও ছাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেকটা উপকারে আসে। 

চুলকানি ডায়াবেটিসহ বিভিন্ন অনেক ধরনের রোগ যেমন রক্তচাপ জনিত সমস্যাও সমাধান করতে সাহায্য করে এই বিলম্ব ফল। বিলম্ব গাছে প্রথমে ফুল আসে এবং এই ফুল থেকে ফলে রূপান্তরিত হয়। বিলম্ব গাছে অনেক ফল আসে।

বিলম্ব ফলের গুনাগুন  

বিলম্ব ফলের গুনাগুন ওকে গবেষকরা বলেন, এই ফলটির ঔষধি গুণ রয়েছে। বিলম্ব ফল বন্যপ্রাণীদের খুব পছন্দের একটি ফল। বিশেষ করে টিয়াপাখি এই ফলটি বেশি পছন্দ করে। তাছাড়াও হরিণের প্রিয় খাবার টক জাতীয় ফল। এই ফলটি খাওয়ার ফলে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হবে। বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। 

শেষ মন্তব্য 

বিলম্ব ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ইতোমধ্যে। যা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক উপকারে আসবে।তবে এই বিলম্ব ফল টি বেশি পরিমাণে কখনোই খাওয়া যাবে না। 

কারণ এটিতে ক্যালসিয়ার অগজালেট থাকে। যা মানব দেহের কিডনিকে বিকল্প করে দিতে পারে এটা অবশ্যই ডোজ মেন্টেন করে বা পরিমিত মাত্রায় খেতে বলেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা। আর বিলম্ব ফলটি বেশি পাওয়া যায় সিলেট, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম এই অঞ্চলগুলোতে। 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url